নিজস্ব প্রতিবেদক
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবঃ)জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন ভূমি দস্যুদের কঠোর হস্তে দমন করা হবে। তাদেরকে কোনমতেই ছাড় দেওয়া হবে না ।তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। ভূমি দস্যুদের শুধু আইনের আওতায় আনলেই হবেনা। যেহেতু কেরানীগঞ্জে জেলখানা রয়েছে প্রয়োজনে তাদেরকে এইখানে রাখা হবে। এই কাজে যদি কেউ বাধা দেয় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি আজ সকালে কেরানীগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শুভাঢ্যা খাল পুনঃ খনন এবং খালের উভয় পাড়ের উন্নয়ন ও সুরক্ষা প্রথম পর্যায়ের প্রকল্পের বাস্তব কাজের উদ্বোধন কালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, এই খাল দিয়েই আমি একসময় আমার জন্মস্থান সিরাজদিখান থেকে ঢাকায় আসতাম। এই খালের অবস্থা আগের মতো আর নেই। জীবিকা নির্বাহের জন্য ও পরিবেশের ভারসাম্যের জন্য, পানি নির্গমনের জন্য, কৃষি কাজে ব্যবহারের জন্য এই খালটি অতীতে এলাকার মানুষের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু সময়ের সাথে বর্জ্য অব্যবস্থাপনা, পানি চলাচলের বিঘ্নতা, অনবরত ডাম্পিং ও স্থানীয় কতিপয় ভূমিদস্যুদের স্বেচ্ছাচারিতায় ক্রমান্বয়ে খালটিরর কার্যকারিতা ধ্বংস হয়ে গেছে। অত্র এলাকার পানি প্রবাহের প্রাণ ভোমর ঐতিহ্যবাহী এই খালটি আজ হুমকির সম্মুখীন। এক সময়ে খালটি বুড়িগঙ্গা ও ধলেশ্বরী নদীর সংযোগ করতো এবং দেশীয় মাছের অভয় অরণ্যে পরিণত ছিল। এক সময় খাল দিয়ে নৌকা চলত, মাছ ধরা যেত এবং খালের পানি কৃষি কাজে ব্যবহার করা যেত। অথচ এই খালটি বর্তমানে পুরোটাই বর্জ্য ও পলিথিনে ভরা। খুবই দুঃখের বিষয় খালের কিছু অংশ এমনভাবে ভরাট হয়ে গিয়েছে যেন সেখানে হেঁটে পার হওয়া যায়। সাত কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এই শুভাঢ্যা খালের অস্তিত্ব বর্তমানে বিলিনের পথে। ইতিপূর্বেও ২০০৭ সালে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় খালটি সংস্কার করা হলেও একটি অসাধু চক্রের অপতৎপরতায় সেটি আর হয়নি। খালটি উদ্ধার হলে পানি প্রবাহ হবে। জীব বৈচিত্র ফিরে আসবে। খালের পানি যেন আর দূষিত না হয় সেই জন্য আমাদেরকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ভুলক্রমেও যেন কোন অসাধু ভূমি দস্যুরা খাল দখল করতে না পারে সেই দিকে সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে। খাল দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। পরিবেশ বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, খালটি প্লাস্টিকে ভরে গেছে । খালের দুইপার ঘেঁষে বড় বড় বিল্ডিং হয়েছে। খালটি খনন করার জন্য একটি ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। এজন্য আমরা সেনাবাহিনীর সাথে কথা বলে তাদেরকে এই কাজটি দিয়েছি। এই খালটি অন্য খাল গুলোর মত নয়। পরিবেশগত বিবেচনায় এই খালটির গুরুত্ব অন্যরকম। খালটি গভীরভাবে খনন করার কথা ভাবা হচ্ছে। আর যেন অবৈধ দখল না হয় এজন্য খালের দুইপাড় ঢালাই করতে হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ, সেনা সদরের ইঞ্জিনিয়ার ইন চীফ মেজর জেনারেল মোহাম্মদ হাসান উজ্জামান, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পরিচালক এনায়েত উল্লাহ
চৌধুরী,ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ,কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিনাত ফৌজিয়া প্রমূখ। এই প্রকল্প ব্যায় নির্ধারণ করা হয়েছে ৩১৭ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ এক বছর মেয়াদ।